জীবন যুদ্ধে হার না মানার গল্প
জীবনে হার না মানার গল্প
জীবন যুদ্ধে হার না মানার গল্প
ঘুরে দাড়ানোর গল্প
আমি কে ?আমার কি করা উচিত?? কেন একজন মানুষ সবসময় হাসিখুশি থাকে আর তার পাশের জন কান্নায় ভেঙে পড়ে ।কেন একজন ভীত ও চিন্তত অথচ আপনার পাশের জন কত আত্নবিশ্বাসী । একজন বিবাহিত জিবনে সুখি কিন্তু অপরজন কেনো নয়? ঠান্ডা মাথায় ভাবতে গেলে নিজেকে বেকুব মনে হওয়ার স্বাভাবিক । আজ এর উত্তর খুজে ফিরছি।
একটা জিবন যে সফলগাথা হবে তা কিন্তু নয়। চরম দুরাবস্থা আর ব্যর্থতার মাঝে স্বপ্ন আর আশার আলো জ্বেলে রাখার নাম জিবন । যদি আপনিও স্বপ্ন দেখেন নিজের চেষ্টা, মেধা, আর শ্রম দিয়ে একদিন নিজেকে ও পৃথিবীর বুকে উজ্জল করে জেতে পারবেন ।
জিবন কি ? ব্যার্খতা কেমন ? এবং সাফলতার সুত্র নিয়ে আজকের ভিডিওটা সাজানো । ফীরছি ইন্ট্রুর পর যদি আপনি নতুন হয়ে থাকেন তবে সাবসক্রাইব করে বেল আইকনটি ক্লিক করে রাখুন যাতে করে কোন ভিডিও মিস না হয়ে যায়।
ব্যর্থতা কিরুপ হতে পারে ?
কোন ব্যর্থতাই ব্যর্থতা নয় যদি আপনি সেটাকে মন থেকে না ভাবতে পারেন ।
ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাড়ানোই জিবন। জিবন পাথরর পুর্ন রাস্তায় চলার মত যেখানে আপনি অতি কষ্টে চলবেন কিন্তু আপনার দিকে লক্ষ করে অনেকে পাথর ছুড়বে । ব্যর্থতা যতই বেশী হবে মনে রাখবনে ব্যর্থতা যত বেশী আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।
![]() |
Viddopie : JunaidJonye |
জ্যাক মা,
একজন চীনা উদ্যোক্তা, যিনি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন পাইকারী ক্রয়-বিক্রয় সাইট আলিবাবা’র প্রতিষ্ঠাতা , সাবেক সিইও, ও বর্তমান নির্বাহী চেয়ারম্যান। এপ্রিল মাসের হিসাব অনুযায়ী তাঁর বর্তমান সম্পদের পরিমান ৪০.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার!
জ্যাক ৪র্থ শ্রেনীতে তিন বার ফেল করা একজন জিবন যোদ্ধা ।এমনকি ৪বার মাধ্যমিক পরিক্ষা দেওয়ার পর কলেজে ভর্তি হবার সুযোগ পান।তিনি ৩০টি চাকরির জন্য চেষ্টা করেন, এবং প্রতিটিতেই ব্যর্থ হন।
জ্যাক এক সাক্ষাতকারে বলেন , একটি চকরির পরিক্ষাতে আমরা ২৪ জন পরিক্ষাতে অংশগ্রহন করি কিন্তু তারমোধ্যে ২৩ জনের চাকরি হলো আর একজনের হলো না । আর সে হলাম আমি । জ্যাক মা বলেন ,
জিবন যত কঠিনই হোক, যত ব্যর্থতাই আসুক, মানুষ যদি নিজের বড় হওয়ার লক্ষ্যে অটল থাকে – তবে কিছুই অসম্ভব নয়।
হার্ভার্ডে ১০ বার প্রত্যাখ্যাত হয়ে জ্যাক মা নিজেকে বলেছিলেন: “পড়তে হয়তো পারলাম না, কিন্তু আমি একদিন ওখানে লেকচার দেব”
স্বপ্ন দেখে ব্যর্থ হলে অন্যরা যখন স্বপ্ন দেখার সাহসই হারিয়ে ফেলে, কিন্তু তিনি শেখালেন সপ্ন কিভাবে বাচিয়ে রাখতে হয়।
এখানেই জ্যাক মার মত মানুষের সাথে সাধারন মানুষের পার্থক্য। একারণেই তিনি একজন মানুষ হয়েও, একটি ইতিহাস হতে পেরেছেন।
আমার দ্বিতীয় গল্পটা মুনিবা মাজারি:
যিনি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও মানসিক বাধা পেরিয়ে আজ বিশ্বের কাছে নিজের পরিচিতি করে নিয়েছেন। তিনি বুঝিয়েছেন, যা কিছু হারিয়েছেন তা দিয়ে নয় বরং যা কিছু আছে তা নিয়েই নিজেকে নতুন করে কিভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। আর আজ মুনিবা মাজারি পাকিস্তানের প্রথম মডেল যিনি হুইলেচেয়ার ব্যবহার করেন। মুনিবা একাধারে একজন চিত্রশিল্পী, সংগীতশিল্পী, টিভি উপস্থাপক ও মোটিভেশনাল স্পিকার।
২০০৫ সালে মুনিরা মাজারি এক সাবেক বিমান বাহিনীর কর্মকর্তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিবাহ জিবন তার সুখে হলোনা ।বিয়ের দুই বছর পর মর্মান্তিক এক সড়ক দূর্ঘটনার সম্মুক্ষীন হন এই দম্পতি। তার ডান হাতের রেডিয়াম-আলনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাতের কব্জি ভেঙে যায়। কাঁধের হাড় ও কণ্ঠনালী মারাত্মক ক্ষতবিক্ষত হয়। মেরুদণ্ড আঘাত প্রাপ্ত হয়।এই সময়টা ছিল তার জন্য হতাশা ও একাকীত্বের আর সঙ্গী হিসেবে ছিল অশ্রু।সময়ের সাথে সাথে তার জীবনের সমস্ত দুঃসংবাদগুলো তার কানে আসতে শুরু করলো। ডাক্তার তাকে বললেন, আমি শুনেছি ছবি আঁকা আপনার শখ কিন্তু আপনি আর কোনোদিন ছবি আঁকতে পারবেন না। আর আপনার মেরুদণ্ডের অবস্থা এতোটা খারাপ যে আপনি আর কোনোদিন হাঁটতেও পারবেন না। ডাক্তার আরও বললেন, আপনি কোনদিন মা হতে পারবেন না। দৃঢ়চেতা মুনিবা মাজারি দীর্ঘশ্বাসের সাথে তার সমস্ত দুঃসংবাদগুলোকে উড়িয়ে দিলেন।
মুনিবা মাজারি লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই তিনি লড়াইয়ের মাঠে নামলেন। তার ভাইকে রঙের ব্যবস্থা করে দিতে বললেন। এবং তুলির আচড়ে নিজের বেদনাকে চিত্রায়িত করতে থাকলেন। সূক্ষ্মচেতনার মুনিবার আঁকা প্রথম ছবিটি ছিলো, বিছানায় তার মৃতদেহের ছবি। এই ছবিটিই তার ঘোষিত যুদ্ধকে অনুপ্রাণিত করে তুলেছিল। ছবিতে তিনি জীবনের গল্প বলতে পারতেন। আশপাশের মানুষ তার ছবির প্রসংশা করতে থাকলো।
মুনিবা মাজারি অন্য কারও জন্য নয়, শুধু নিজের জন্য বেঁচে থাকতে চাইলেনএবং সঠিক মানুষ হওয়ার তাগিদ অনুভব করলেন; যার ফলে তিনি পরিণত হয়েছেন আজকের মুনিবা মাজারিতে। একজন অনুসরণীয় ব্যক্তিত্বে।সামনে অগ্রসর হতে ভয় পেতেন তিনি। তাই ভয় পাওয়া সবকিছুর একটা তালিকা তৈরি করলেন এবং শুরু করলেন ভয়কে জয় করার অদম্য যুদ্ধ। তার প্রথম ভয় ছিলো ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ । এ সময় কঠিন পরিস্থিতির শিকার হলেন মুনিবা। তার স্বামী বিয়ে করলেন। তিনি আবেগ চাপা দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন স্বামীকে। শুভ কামনা জানালেন সামনে এগিয়ে যাওয়ার। দ্বিতীয় ভয় ছিলো, ‘মা না হতে পারা’ কিন্তু এটা আর সম্ভব নয় সেজন্য তিনি একটা পুত্র সন্তান দত্তক নিলেন। তিনি তখন মা হওয়ার আনন্দ ফিরে পেলেন। তিনি চেয়েছিলেন নিজেকে বদ্ধ না রেখে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে। তাই তিনি তার শখটাকে কাজে লাগালেন। ছবি আঁকা শুরু করলেন। বিভিন্ন মডেলিং ক্যাম্পে যোগ দিলেন। তিনি পাকিস্তানে একটি জাতীয় টিভিতে উপস্থাপক হিসেবে যোগ দিলেন। তার চলার পথটা হয়তো কঠিন ছিল কিন্তু তিনি থেমে যাননি। এখন সে কথা বলে নারী ও শিশুর অধিকার নিয়ে। অবশেষে তার সেই অর্জনের দিনগুলো আসলো। ২০১৫ সালে বিবিসির সেরা ১০০ জন নারীর মধ্যে তাকে স্থান দেওয়া হয় ও সম্মানিত করা হয়। ২০১৬ সালে ‘ফোর্বস’র সেরা ৩০ জন নারীর তালিকায় তার নাম স্থান পায় ৩০ তম অবস্থানে।
মুনিবা মাজারির মনে আসলে থেমে গেলে চলবে না, তুমি যখন নিজেকে একটি হু্চইলচেয়ার এর মধ্যে আবদ্ধ রাখবে, তখন সবচেয়ে কষ্টের দিক হল, মানুষজন ভাবেযে ওরা অন্য মানুষদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এর কারণ হচ্ছে ওরা পরিপূর্ণ আর আমরা হুইলচেয়ারে বন্দিরা অসম্পূর্ণ। তাই তোমার অবস্থান যাই হোক না কেন নিজের প্রতি নিজের আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। তুমি যদি নিজেকে গ্রহন করতে পার গোটা পৃথিবী তোমাকে গ্রহণ করবে”।তিনি বলেন, জীবন হল একটা পরীক্ষা ও পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ণের জায়গা আর পরীক্ষা কখনও সহজ হয় না। জীবনকে যদি শুধু উদযাপন করতে চাওয়া হয় জীবন তোমাকে সে আয়োজন করে দিবেবিখ্যাত মানুষেরা সবসময় বলে থাকেন, জীবনে ব্যর্থ তার কোন স্থান নেই। কিন্তু আমি বলি জীবনে ব্যর্থতা অবশ্যই থাকবে, ব্যর্থ না হলে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব না। প্রতিটি নিঃশ্বাসকে উপভোগ কর। জীবনকে উদযাপন কর, মৃত্যুর আগেই মরে যেওনা । সুখ থাকে কৃতজ্ঞতায়, তাই নমনীয় হয়ে বেঁচে থাক, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে অমর করে তোল।।
স্টিভ জবস নামটা কারও অজানা নয়।
অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা, যার হাত ধরে এসেছে ম্যাক, আইফোন, আইপ্যাডের মত যুগান্তকারী বেশ কিছু পণ্য। ২৪ ফেব্রুয়ারি স্টিভ জবসের জন্মদিন। এমন একটা সময় ছিল, যখন স্টিভ জবস কোনো কথা বললেই তা বাণী হয়ে যেত
আজ 3টি কথা দিয়ে শেষ করব আজকের ভিডিও।
1 কখনো কখনো জীবন আপনার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করবে। তবে বিশ্বাস হারাবেন না।”
নিজের ভিতর বিশ্বাস রাথুন বিশ্বাস রাথুন আপনার মধ্যকার শক্তি, ভবিষ্যৎ, জীবন বাস্তবতা, কর্মফল, এর উপর…. এটা আপনাকে স্বাধীনভাবে কাজ করার আত্নবিশ্বাস যোগাবে।
২. নিজের মন আর অনুভূতির কথা শোনার সাহস রাখবেন। ওরা ঠিকই জানে আপনি আসলে কী হতে চান। বাকি সব কিছুই গৌণ।”
3.স্টিভ বলেন ,আমার বয়স যখন ১৭ বছর, তখন আমি একটি লেখা পড়েছিলাম যাতে ছিল, "আপনি যদি প্রতিটি দিনকেই জীবনের শেষ দিন মনে করেন, তাহলে আপনি একদিন সত্যি সত্যিই নিজেকে সঠিক প্রমাণ করতে পারবেন।" এই কথাটি আমার মনে দাগ কেটেছিল। আর এরপর থেকেই গত ৩৩ বছর ধরে প্রতি সকালে আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞাসা করতাম, আজই যদি আমার জীবনের শেষ দিন হতো, তাহলে কি আমি সেই কাজগুলোই করতাম যেগুলো আমি আজ করতে চেয়েছি? নিজেকে করার এই প্রশ্নের জবাবে যদি একটানা কয়েকদিন 'না' উত্তর শুনতাম, তাহলেই ধরে নিতাম যে কিছু ব্যাপার পরিবর্তনের সময় এসেছে। আমি এটা ভেবেই সন্তুষ্ট যে সফল উদ্যোক্তাদের ব্যর্থ উদ্যোক্তাদের থেকে যা আলাদা করেছে, তার অর্ধেকই হলো অধ্যবসায়।
No comments